শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ০১:০৫ অপরাহ্ন
রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:: নিখোঁজের একদিন পড়ে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের কাসুয়াডাঙ্গা তীরনই নদী থেকে বুধবার দুই শিশুসহ মায়ের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন- ওই গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী নাসিমা খাতুন(৩০) ও শিশু সন্তান শাওন(৮) ও সাফাত(৪)।
নাসিমার স্বামী আব্দুর রহিম এটিকে আত্মহত্যা দাবী করলেও, নাসিমার মা খালেদা বেগম এটিকে হত্যাকান্ড বলে দাবী করছেন। খালেদা বেগমের দাবী তার মেয়ে জামাই একজন জুয়া খেলায় আসক্ত জুয়ার টাকার জন্য তার মেয়েকে প্রায় অত্যাচার, নির্যাতন করতো।
পারিবারিক ও স্থানীয়দের সুত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার নাসিমা ও তার দুই শিশু সন্তানসহ ছাগল নিয়ে তীরনই নদীর ধারে ছাগল চড়াতে যায়। সেখানেই(নদীতে) তারা দুপুরের গোসল করেছেন বলে স্থানীয়রা দাবী করেছেন। পরে সন্ধ্যা হলেও নাসিমাসহ তার দুই শিশুপুত্র বাড়ীতে না ফেরায় নাসিমার স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন খোজাখুজি করেন।
অনেক রাত পর্যন্ত নদী এলাকাসহ বিভিন্ন আত্নীয় স্বজনের বাড়ীতে খোজাখুজি শেষে পরের দিন বুধবার সকালে নাসিমার শ্বশুর সামসুল হক তীরনই নদীর ধারে নাসিমাসহ তার দুই শিশু সন্তানের মরদেহ নদীর বালু’র মধ্যে আটকা থাকা অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার দেয়। পরে স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় মরদেহ নদী এলাকা থেকে তুলে নেওয়া হয়। মরদেহ উদ্ধারের সময় মায়ের শাড়ির আচল দিয়ে দুই শিশু সন্তানের শরীর বাধা ছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
মরদেহ উদ্ধারের প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা পর রাণীশংকৈল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত রাত থেকে তিনটি মানুষ নিখোঁজ পুলিশকে জানালেও পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ভোর সকালে মরদেহ উদ্বার হলেও ঘটনাস্থলে পুলিশ আসতে সময় ক্ষেপন করেন।
এদিকে নাসিমার মা খালেদা খাতুন এটিকে হত্যাকান্ড দাবী করলেও নাসিমার স্বামী আব্দুর রহিম ও শ্বশুর সামসুল হক ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে দাবী করছেন। দুই পক্ষের ভিন্ন ভিন্ন দাবী হওয়ায় মরদেহ তিনটির মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। আসলে এটি কি, হত্যা নাকি আত্মহত্যা?
জানতে চাইলে কাশিপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বকুল বলেন, গত মঙ্গলবার থেকেই শিশুসহ তার মা নিখোঁজ রাতে অনেকবার নদীতে খোজাখুজি করা হয়েছে। বুধবার সকালে দুই শিশুসহ তার মায়ের লাশ নদী থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেছে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, মৃত্যুগুলো আসলে কিভাবে হলো তা সঠিক বলা মুশকিল, তবে ময়নাতদন্ত হলে মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন হবে বলে তিনি দাবী করেন।
রাণীশংকৈল থানার ওসি তদন্ত মহসিন আলী মুঠোফোনে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। মরদেহ তিনটির প্রাথমিক সুরতহাল তৈরী করা হয়েছে। মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। তবে নিখোঁজ ও মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে পুলিশের অবহেলা ও সময় ক্ষেপনের প্রশ্নে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।